উজানের ভারী ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে নিম্নাঞ্চলে হুহু করে পানি প্রবেশ করছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে স্থায়ী বন্যার। পানির চাপে ডালিয়া ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সকাল ৬ টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। সকাল নয়টাতেও একই উচ্চতায় তা অপরিবর্তিত রয়েছে। পরে দুপুর বারোটায় তা বিপৎসীমার ১৩ সেমি ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। পরে বিকেল তিনটায় তা ১৭ সে.মি. ওপরে রেকর্ড করা হয়।
এর ফলে জেলার পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। নিম্নাঞ্চলে ইতিমধ্যে পানি ঢুকে গেছ্ব। চরাঞ্চলেও পানিতে ডুবেছে বাড়িঘর ও রাস্তা ঘাট।
তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী,দোয়ানী,ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া,হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,কালমাটি,পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ,কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি,রাজপুর,গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ ইতিমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ডুবেছে চলাচলের রাস্তা।
পশুপাখি নিয়ে বন্যার্তরা উচু স্থানে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। অনেকেই উচু স্থানে চুলা জ্বালিয়ে রান্নার কাজ সাড়ছেন।
নলকুপ, টয়লেটে পানি উঠায় বিশুদ্ধ পানি সংকট ও স্যানিটেশন সমস্যায় পড়ছেন তারা।
গোবর্ধন এলাকার জামাল মিয়া বলেন, সকাল থেকেই পানি বাড়ছে, বারিঘর ডুবে যাচ্ছে। অনেকটা বিপদে পরে আছি।
মহুবর রহমান বলেন, সকাল থেকেই পানি হাটু সমান তাই খাটের উপর চুলা তুলে রান্না বান্না কাজ করতে হচ্ছে। গরু-ছাগল বাধে নিয়ে গিয়ে রাখছি। কোনরকমে খাটের উপরে উঠে থাকতে হচ্ছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে ফলে আরও পানি বাড়বে। পরে নেমে যাবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক বন্যার খোঁজ রাখছি। জেলায় দুর্যোগকালীন ৪৫০ মেট্টিক টন চাল ও সাত লাখ টাকা বরাদ্দ আছে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ইউএনও এবং পিআইওর মাধ্যমে ১১০ মেট্টিক টন চাল দেওয়া হয়েছে। আবারও তালিকা করে বরাদ্দ দেওয়া হবে।